নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিলে কতটা শক্তিশালী হবে, কোথায় আঘাত হানতে পারে

আবহাওয়া জানুন

বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ থেকে সৃষ্টি হওয়া নিম্নচাপটি আজই গভীর নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এটি এখনো ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেয়নি। তবে তা যদি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেয়, তবে এর গতিবেগ কত হতে পারে, সম্ভাব্য আঘাত হানার এলাকা ও সময় কোনটি হতে পারে, এটি কোন ধরনের ঘূর্ণিঝড় হতে পারে, সে সম্পর্কে ধারণা দিয়েছেন আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদেরা।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে আজ শুক্রবার সকালেই নিম্নচাপ সৃষ্টির কথা জানানো হয়েছে। এ জন্য দেশের চার সমুদ্রবন্দরে ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্কসংকেতও দেখতে বলা হয়েছে। মাছ ধরার যানগুলোকে গভীর সমুদ্র না যেতে বলা হয়েছে। এই নিম্নচাপ যদি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেয়, তবে এর নাম হবে ‘রেমাল’। নামটি ওমানের দেওয়া। এর অর্থ ‘বালু’।

রেমাল যদি আসে, তবে বাংলাদেশের সুন্দরবনসংলগ্ন খুলনা ও পটুয়াখালীর খেপুপাড়ার উপকূলের দিকেই আঘাত হানতে পারে বলে ধারণা করছেন আবহাওয়াবিদেরা। এর বিস্তৃতি অপেক্ষাকৃত বেশি হবে বলে মনে করা হচ্ছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের ঝড় সতর্কীকরণ কেন্দ্রের উপপরিচালক মো. শামীম আহসান আজ প্রথম আলোকে বলেন, এখন পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়নি। গাণিতিক মডেলগুলো বলছে, এটি সৃষ্টি হলে তা বাংলাদেশের উপকূলের দিকেই আসতে পারে। এর গতিবেগ ঘণ্টায় ১২০ থেকে ১৩০ কিলোমিটার হতে পারে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আরেক আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে সৃষ্ট বাতাসের গতিবেগ যদি ঘণ্টায় ৬২ থেকে ৮৮ কিলোমিটার হয়, তখন তাকে ‘ঘূর্ণিঝড়’ বা ট্রপিক্যাল সাইক্লোন বলা হয়। গতিবেগ যদি ৮৯ থেকে ১১৭ কিলোমিটার হয়, তখন তাকে প্রবল ‘ঘূর্ণিঝড়’ বলা হয়। আর বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ১১৮ থেকে ২১৯ কিলোমিটার হয়, তখন সেটিকে ‘অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড়’ বলা হয়। গতিবেগ ২২০ কিলোমিটার বা তার বেশি হলে তা হয় ‘সুপার সাইক্লোন’।

আবুল কালাম মল্লিক বলেন, রেমাল আঘাত হানলে, তা প্রবল থেকে অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় হতে পারে। তবে ‘সুপার সাইক্লোন’ হওয়ার কোনো আশঙ্কা নেই।

ঘূর্ণিঝড়ে কখন নাগাদ আঘাত হানতে পারে, তা এখনো সুস্পষ্টভাবে বোঝা যাচ্ছে না বলে জানান মো. শামীম আহসান। তিনি বলেন, তবে ধারণা করা হচ্ছে, এটি আগামী রোববার রাতের আঘাত হানতে পারে। তবে এর অগ্রভাগ দুপুরের দিকেই আসতে পারে বলে মনে করেন আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ইনস্টিটিউট অব ওয়াটার অ্যান্ড ফ্লাড ম্যানেজমেন্টের (আইডব্লিউএফএম) অধ্যাপক এ কে সাইফুল ইসলাম মনে করেন ঘূর্ণিঝড়টি আঘাত হানতে পারে উপকূলের অনেক বড় এলাকাজুড়ে। এতে ক্ষয়ক্ষতি বেশি হওয়ারও আশঙ্কা করছেন তিনি।

এ কে সাইফুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশের দক্ষিণ–পশ্চিমের উপকূল রেমালের সম্ভাব্য আঘাতস্থল। তবে দেশের সর্বত্রই এর প্রভাব দেখা যেতে পারে। সেই প্রভাব বোঝা যাবে বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়ার মধ্য দিয়ে। ঘূর্ণিঝড়ের সময় পাঁচ থেকে ১০ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *